তেভাগা আন্দোলন কেন হয়েছিল-তেভাগা আন্দোলনের গুরুত্ব, Tebhaga andolan in bengali

তেভাগা আন্দোলনের গুরুত্ব ? তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী কে ছিলেন ?


 তেভাগা আন্দোলন 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হলে ভারতে বেশ কয়েকটি কৃষক আন্দোলন সংঘটিত হয়। এই আন্দোলনগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত তেভাগা কৃষক আন্দোলন। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে দিনাজপুর জেলার ঠাকুরগঞ্জ মহকুমার রামচন্দ্রপুর গ্রামে প্রথম তেভাগা আন্দোলনের সূচনা হয়।

তেভাগা আন্দোলন (১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দ) /  তেভাগা আন্দোলন কোথায় হয়েছিল ? 

(i) আন্দোলনের কারণ: প্রাক্ স্বাধীনতা পর্বে বাংলাদেশে এক ধরনের সামন্ততান্ত্রিক কৃষিব্যবস্থা চালু ছিল। *এই সময় জোতদারদের জমি লিজ নিয়ে বর্গাদার কৃষকরা নিজেদের খরচায় জমি চাষ করত। কিন্তু চাষিরা পেত ফসলের অর্ধেক অংশ।

* স্থানীয় জমিদাররাও নানা কর আদায়ের ব্যাপারে চাষিদের উৎপীড়ন করতেন।

 (ii) কৃষকদের দাবি: ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দের ফ্লাউড কমিশনের রিপোর্টে বলা হয়েছিল যে, চাষিরা উৎপন্ন ফসলের ২/৩ অংশ পাবে। এই দাবি আদায়ের জন্য ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে বন্দীয় প্রাদেশিক কৃষক সভা বাংলাদেশে তেভাগা আন্দোলনের ডাক দেয়। নিজ খামারে ধান তোলো—এই দাবিতে চাষিরা সোচ্চার হয়।

(iii) প্রসার: ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দের শেষদিকে দিনাজপুর জে রামচন্দ্রপুর গ্রামে প্রথম তেভাগা আন্দোলনের সূচনা হয়। তিনভাগের দু-ভাগ ফসল পাওনার দাবিতে চাষিরা সোচ্চার হয়। উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল, মেদিনীপুরের তমলুক, পূর্ববঙ্গের যশোহর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর, খুলনা, নদিয়া প্রভৃতি স্থানে তেভাগা আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে। • মেদিনীপুরের সুতাহাটা, মহিষাদল, নন্দীগ্রাম এবং ২৪ পরগনার কাকদ্বীপে তেভাগা আন্দোলন প্রকৃত গণ আন্দোলনের চেহারা নেয়। উত্তরবঙ্গে রাজবংশী সম্প্রদায় এই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।

তেভাগা আন্দোলনের জনক কে? তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী কে ছিলেন ? 

(iv) নেতৃত্ব : জলপাইগুড়িতে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন ভবানী সেন, চারু মজুমদার। রংপুরে সুধীর মুখার্জী, মেদিনীপুরে বিমলা মন্ডল প্রমুখ।


(v) তেভাগা আন্দোলনের ফলাফল

1) শেষপর্যন্ত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেখা দিলে এই আন্দোলনের অবসান ঘটে।

2)আন্দোলনের চাপে সরকার বর্গাদার সাময়িক নিয়ন্ত্রণ বিল পাস করে।

3)  এই বিলের ভিত্তিতে ভাগচাষি উচ্ছেদ বন্ধ করা হয়।

4 )  উৎপন্ন ফসলের ২/৩ অংশ বর্গাদারদের দেওয়ার কথা বলা হয়।

Post a Comment

0 Comments