সাহিত্যিক মহাকাব্য কাকে বলে ? সাহিত্যিক মহাকাব্য বৈশিষ্ট্য ? সাহিত্যিক মহাকাব্য কয়টি ? সাহিত্যিক মহাকাব্য কি ?

সাহিত্যিক মহাকাব্য কাকে বলে? একটি সাহিত্যিক মহাকাব্যের উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দাও সেটি কেন সাহিত্যিক মহাকাব্য।


সাহিত্যিক মহাকাব্য কি :  কোনো একজন কবির উচ্চতর কল্পনার সাহায্যে, যাতে জাতীয় জীবনের আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং সুউচ্চ জীবনাদর্শ প্রকাশিত হয় ও অতীত কাহিনীর নতুন, নিজস্ব নির্মাণে, রচনার শিল্পগুণে মহাকাব্যিক চেতনার পরিচয় ফুটে ওঠে যে মহাকাব্যে তাকেই সাহিত্যিক মহাকাব্য বলা হয়।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের 'মেঘনাদবধ কাব্য' সাহিত্যিক মহাকাব্যের শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। সাধারণত মহাকাব্যের বৈশিষ্ট্যগুলি Literary Epic-এও সমভাবে প্রযোজ্য হয়। বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল আখ্যায়িকা শুরু হয় কাহিনীর মাঝপথ থেকে। ‘মেঘনাদবধ কাব্য'-এ দেখি রাবণের প্রিয় পুত্র বীরবাহুর মৃত্যু সংবাদ দিয়ে কাহিনীর শুরু। এখানেও কেন্দ্রীয় চরিত্র রাবণ জাতীয় বীর, রামচন্দ্র ও তাঁর সৈন্যদের সাথে রাবণ-মেঘনাদ প্রভৃতির ব্যাপক যুদ্ধের বর্ণনা এখানে পাই।

পড়ুন 👉 মহাকাব্য কাকে বলে ? মহাকাব্যের বৈশিষ্ট্য ?

 শৈলীর গাম্ভীর্যে ‘মেঘনাদবধ কাব্য' নতুনত্ব বহন করেছে অমিত্রাক্ষর ছন্দ ব্যবহার করে। অলৌকিক নানান শক্তির ব্যবহার পাই মেঘনাদবধ- এ– যেমন মায়াদেবীর আবির্ভাব, নরকদর্শন প্রভৃতিতে। এর আখ্যান পুরাণ কেন্দ্রিক। দেবী সরস্বতীর আর্শীবচন নেওয়া হয়েছে। নটি সর্গে ‘মেঘনাদবধ কাব্য'-এ বিভক্ত। এর পটভূমি স্বর্গ (দেবদেবীর কার্যকলাপ) মর্ত্য (রাম-রাবণ-মেঘনাদ-সীতা) পাতাল (রামচন্দ্রের নরক দর্শন) প্রসারী এবং কবি শ্রীমধুসূদন বীররসের (‘গাইব মা বীররসে ভাসি মহাগীত') কাব্য সৃষ্টি করতে চেয়েছেন। সামগ্রিক বিচারে, মহাকাব্যের বিশ্বনাথ প্রদর্শিত নির্দিষ্ট নিয়মগুলি মেনেই তৈরী করেছেন। যদিও সমস্ত ক্ষেত্রেই তাঁর প্রদর্শিত নীতিগুলি সমভাবে প্রয়োগ করেন নি। তবু বাংলা সাহিত্যিক মহাকাব্যের রচনায় শ্রীমধুসুদনই নতুন পথের দিশারী।


Post a Comment

0 Comments